মোঃ জামাল হোসেন ঃ-
চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে দুই শিশু বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের বয়স বাড়ে তো শরীর বাড়ে না। গ্রোথ রেজিস্টান্ট হরমোন সিন্ড্রোম নামের এ জটিল রোগটি শিশুদের জীবনকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এ আপন দুই ভাই বোন যেতে চায় স্কুলে, সমাজের অন্য শিশুদের মতো মানুষ হতে চায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিরল এ রোগে বিশ্বে মাত্র ৩শত মানুষ আক্রান্ত। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর দক্ষিণ এলাকার প্রত্যন্ত এক গ্রাম দিনাজে এ খর্বাকৃতির ১শত লোকের বাস। ওই গ্রামের ব্যক্তিরা রক্তের স¤পর্কীয় স্বজনদের মাঝে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এ ভাবে বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রী উওর ইউপির উল্যাশ্বর গ্রামের পাটওয়ারী বাড়িতে খর্বাকৃতির দুই শিশু বসবাস করছেন। শিশুদের পরিবার সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালে ওই বাড়ির রুস্তম আলী (৮০) পুত্র মো. ইয়াছিন (৫৫) সঙ্গে দাদিয়াপাড়া গ্রামের আম্বার আলীর (৯০) কন্যা শাহানারা বেগম(৪০) বিয়ে হয়। দ¤পতিরা স¤পর্কে একই রক্তের খালাতো ভাই বোন। তাদের প্রথম সন্তান ১৯৯৬ সালে ভূমিষ্ঠ হয়। তার নাম শাহজালাল, সে বর্তমানে কুমিল্লায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার (সার্ভে) পড়াশোনা করছেন। ২০০৪ সালের ১লা ডিসেম্বরে দ্বিতীয় সন্তান ফারহানার ইয়াসমিনের (১৩)জন্ম হয়। ২০০৭ সালের ৫ই নভেম্বর তৃতীয় সন্তান আরাফাতের আহম্মদেও (১০) জন্ম হয়। শিশুরদের মা জানায়, গত কয়েক বছরে ফারহানার- আরাফাতের শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি না হওয়ার বিষয়টি তার নজরে আসে। এর পর শুরু হয়, শাহরাস্তি হাজিগঞ্জ, লাকসাম, কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তারের নিকট শরণাপন্ন হওয়া। তাতে চিকিৎসায় কোনো ফল না মিলায় ঢাকা বন্ধবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যালবিশ্ববিদ্যালয়এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগে হাজির হন। সেখানে সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার শারমিন জাহান প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে বলেন। সেখানে শনাক্ত হয় বিরল এ রোগের।পরীক্ষারিপোর্টেজানাযায়,মানবদেহের বৃদ্ধির জন্য যে পরিমান হরমোন থাকা প্রয়োজনীয় তা তাদের রয়েছে। শিশু দুইটির শরীরের সমস্যা হচ্ছে ওই হরমোন শরীরে জায়গা মতো কাজ করছেনা। চিকিৎসকরা জানান, এ রোগের চিকিৎসা বাংলাদেশে এখনই সে ভাবে চালু হয়নি। প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার। আইজিএফ (ইনজেকশন ) প্রতিদিন ২টা করে দিতে হবে। সময় লাগবে ১০ বছর। সে হিসাবে প্রতি মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকা করে ১০ বছরে প্রায় ৮০ লাখ টাকা লাগবে। এ চিকিৎসা ব্যায়ের কথা শুনে দুবাইতে শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত পিতা ইয়াছিন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। পিতার অপারগতায়, শিশু দুটির চিকিৎসার সম্ভাবনা থাকা সর্তে তা আর হচ্ছে না। এযেন তাদের খর্বাকৃতির শরীরকে বাস্তবতা অক্টোপাসে গিলে খাওয়ার সামিল। শাহানারা বেগম, অ্যাকাউন্ট নং-৩৬১২১০০১১৬৩৪১ এক্সিম ব্যাংক, মুদাফফরগঞ্জ শাখা, লাকসাম, কুমিল্লা।