শাহরাস্তিতে ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় ৫টি বসতঘরে লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের কুরকামতা গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়। থানায় অভিযোগ শেষে বাড়িতে এসে বহিরাগত সন্ত্রাসীসহ ৩০/৪০ জন কুরকামতা আমিন সাহেবের বাড়িতে এ হামলা চালায়।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে উভয় পক্ষের আহত হন আব্দুল লতিফ (৪০), মুন্না (২৬), রাকিব, হাবিব, নাছরিন, তাজুল ইসলাম, লাকী বেগম, মর্জিনাসহ ১৬ জন। লতিফ গং রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে বসত ঘরে এই হামলা ও লুটপাট চালায়। হামলাকারীরা হলো : কুদ্দুসের ছেলে সারোয়ার ও জাকির, সিরাজুলের ছেলে গিয়াস উদ্দিন ও দুলাল (৩২), বাবরের ছেলে রাজ (২০) ও মুন্না (৩৫), নাজিরের ছেলে ইয়াছিনসহ ৪০-৫০ জন। এ সময় হামলাকারীরা সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে বাচ্চুর দোচালা টিনশেডের ঘর, বিল্ডিংয়ের দরজা-জানালা ভাংচুর করে। একই বাড়ির নিরীহ ইউসুফের স্ত্রী জুহুরার একমাত্র মাথা গোজাঁর দোচালা টিনশেডের ঘর ভাংচুর করে ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্রও ভেঙ্গে তছনছ করে ফেলে। সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে তাজুল ইসলামের চৌকাঠ চার চালা টিনশেড ঘরে ব্যাপক ভাংচুর করে। হামলাকারীরা দরজা, জানালা, ঘরের বেড়া ভাংচুর করে। মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সুজনের দোচালা টিনশেড ঘরে হামলা ও ভাচুর করে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য ইউসুফের স্ত্রী জানান, আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমি একজন অসহায় লোক। মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় জাকাতের অনুদানে এ ঘরটি করে মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করি। আমার ঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। তাজুল ইসলামের মেয়ে কলেজ পড়ুয়া মর্জিনা জানান, দুপুরে বাবার উপর হামলা করলে তিনি আহত হয়ে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ ভর্তি হন। মা হাসপাতালে, আমি ছোট ৩ বোনকে নিয়ে ঘরের ভেতরে ছিলাম। হঠাৎ করে রাত ৯টায় ৪০-৫০ জন নারী-পুরুষ দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে আমাদের ঘরের দরজা জানালাসহ ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এ সময় তারা আমাদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। আমি এ হামলার ন্যায় বিচার চাই।
এ বিষয়ে লতিফ গং বলেন, তারা বরং আমাদের মারধর করেছে। আমরা থানায় অভিযোগ করেছি। মামলায় জেতার জন্যে তারা নিজেরা এ ঘরগুলো ভাংচুর করে। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন জানান, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। লতিফ গং এ হামলা চালায়। আমি কয়েকজনকে আহত অবস্থায় দেখি।
এলাকাবাসী জানান, এমন ঘটনা নজিরবিহীন। এ বাড়িতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। পুলিশ প্রশাসনকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করার জোর দাবি ও এলাকার শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে এলাকাবাসী। ওই রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ওই বাড়িতে অবস্থান করে। হামলার শিকার বসত ঘরগুলো পরিদর্শন করেন শাহরাস্তি থানা পুলিশ। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।