হাইমচরে শিশুদের শরীরে গড়া মানবসেঁতুর উপর জুতা পরে হেঁটে যাওয়ার ঘটনা
৩ জনকে দায়ী করে তদন্ত রিপোর্ট পেশ
স্টাফ রিপোর্টার:
হাইমচরের নীলকলম ওসমানিয়া হাই স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানে শিশু শিক্ষার্থীদের শরীরে গড়া মানবসেঁতুর উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার ঘটনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি তার তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। গতকাল সোমাবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ রুহুল আমীনের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেন কমিটি প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) সৈয়দা সারোয়ার জাহান। তিনি জানান, “ঘটনা যেভাবে পত্র-পত্রিকায় এসেছে সেভাবেই ঘটেছে। ঘটনা সংঘটিত হওয়ার প্রমাণ আমরা তদন্তে পেয়েছি।”
কোনো শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শাস্তির সুপারিশ তদন্ত কমিটি করে না। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে সেটাই আমরা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি। “বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রতিবেদনটি পাঠাবেন।” হাইমচরের নীলকমল স্কুলে গত ৩০ জানুয়ারিতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ছাত্রের পিঠের ওপর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারীর হাঁটার ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল বির্তকের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর হাইমচর উপজেলা পরিষদের এই চেয়ারম্যানসহ স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেন এক ছাত্রের অভিভাবক। আর ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এক সদস্যবিশিষ্ট ওই তদন্ত কমিটির প্রধান সৈয়দা সারোয়ার জাহান চাঁদপুরে এসে ২ দিন ধরে তদন্ত শুরু করাকালীন অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন তার কাছে না এসে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের মাধ্যমে একটি চিঠি পাঠান, যাতে ছাত্রের পিঠে চড়ায় ‘ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া হয়’।
তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, “তিনি (হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান) আমাদের কাছে ভুল স্বীকার করেছেন। বলেছেন- এটা তার ভুল হয়ে গেছে। “আর স্কুল স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এবং প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে ও তাদের আয়োজনেই ওই ঘটনা ঘটেছিল।” তাই হাইমচর নীলকমল স্কুলের স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি হুমায়ন কবির পাটোয়ারী এবং প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেনকেও ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এর আগে স্কুলের আয়োজনে পদ্মা সেতুর প্রতীকী উপস্থাপনায় ‘ইচ্ছে না থাকলেও ছাত্রদের জোরালো অনুরোধ’ ফেলতে পারেননি বলে উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেনের দাবির পর প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেনও শিক্ষার্থীদের ওপর দায় চাপাতে চেয়েছেন।
ওই সময় প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেছিলেন, “প্রতিবছরই আমরা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ডিসপ্লে করি। এবারের ডিসপ্লেতে মানবসৃষ্ট পদ্মাসেতু তৈরি করে তাকে (নূর হোসেন পাটোয়ারী) শিক্ষার্থীরা হাঁটার অনুরোধ জানায়। তাতে তিনি সাড়া দেন।”