রফিকুল ইসলাম বাবু ॥
চাঁদপুরের কচুয়া বাজার সংলগ্ন জেলা পরিষদের জায়গা বেদখল করে রেখেছে মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন মানিক। কয়েক দফা নোটিশ করার পরেও স্থাপনা সরিয়ে নিচ্ছেন তিনি। সর্বশেষ ২২নভেম্বর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মান্নান কর্তৃক স্বাক্ষরিত চুড়ান্ত নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয় জেলা পরিষদের মালিকানাধীন লীজকৃত ভূমিতে অবৈধভঅবে স্থাপনা নির্মাণ করেছে বলে অভিযোগ দেন পৌরসভাধীন কড়ইয়া এলাকার মৃত আবদুল মালেক মজুমদারের স্ত্রী মমতাজ বেগম। অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁদপুর জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার নাছির উদ্দিন ওই ভূমি অবৈধ ভাবে দখল করে রেখেছেন মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন। এবং আগামী তিন দিনের মর্ধে তা সরিয়ে নিতে নোটিশ দেন। অপদিকে জেলা পরিষদের নাল ভূমির জন্যে মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন মানিক ও মমতাজ বেগমের পরিবারের সাথে চরম দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। এমনকি বিষয়টি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মানিকের বাহিনী কর্তৃক অর্তকিত হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন মাহিম মজুমদার (৩০) সাইফুল ইসলাম সোহেল (৩০)। বর্তমানে সোহেল ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যদিও ইতোমধ্যে দুই পক্ষই কচুয়ার থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছে। এদিকে ঘটনার পরদিন দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি স্মারকলিলি দেন মুক্তিযোদ্ধা মানিকসহ আরো বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা। আহত মাহিম ও সোহেল জানায়, গত ২৯ নভেম্বর রাতে আমরা জানতে পারি মুক্তিযোদ্ধা মানিক সাহেব অবৈধ দখলে থাকা জায়গায় আরো স্থাপনা তৈরি প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এখবর পেয়ে আমরা ওখানে গেলে মুক্তিযোদ্ধা মানিকের লোকজন ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার দিয়ে আমার উপর অর্তকিত হামলা চালায়। ওই ভূমির লিজার মমতাজ বেগম জানান, আমি বৈধ ভাবে জেলা পরিষদ থেকে কচুয়া মৌজার ২ নং খতিয়ানের ৩৫২নম্বর দাগে ৬২*২৫ পরিমাণ জায়গা লিজ নেই। এই জায়গার পেছনে আমার বসত ঘর । এ জায়গা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমি লিজ পেয়েছি। অথচ তিনি অবৈধ ভাবে ওই ভূমিতে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করেন। ফের নতুন করে স্থাপনা খবর পেয়ে আমার ছেলে মাহিম ও তার বন্ধু জায়গার কাছে গেলে তারা ডাকাত ডাকাত বলে তাদেরকে পিটিয়ে আহত করে। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন মানিক জানান, এ কচুয়া কালিয়া পাড়ার সড়কের কিছু অংশ আমাদের জায়গার উপর দিয়ে গেছে। আমাদের জায়গা সরকার একোয়ার করে নিলেও ওখানে কিছু ভূমি রয়েছে। যা জরিপ করলে বেরিয়ে আসবে। আমার পৈত্রিক সম্পত্তি আমি দখল করেছি। প্রকৃতপক্ষে আমি জায়গা পাবো ৩৫৫ ও ৩৫৬ দাগে। আর মমতাজ বেগম লিজ নিয়েছেন ৫২ দাগে। আর অর্তকিত হামলার ব্যাপারে তিনি জানান আমাদের উপর হামলা করতে এসে আমরা প্রতিহত করেছি। এসময় সোহেল ব্যাথা পেতে পারে। এব্যাপারে চাঁদপুর পৌর সভার মেয়র নাজমুল আলম স্বপন জানান, আমাকে জেলা পরিষদ থেকে উচ্ছেদের নোটিশটির অনুলিপি দেয়া হয়েছে। কয়েক দফায় বিষয়টি মিমাংশা করার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়ে উঠেনি। কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এস এম ইকবাল জানান, ঘটনার দিন রাতে খবর পেয়ে পুলিশ পাঠাই। এ বিষয়টি নিয়ে যেন আইনশৃংখলার অবনতি না হয় সেদিকে বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। মামলা হয়েছে বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে দেখছি। চাঁদপুর জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার নাছির উদ্দিন জানান, গত ৯ ডিসেম্বর আমি পুনারায় ওই জায়গা পরিদর্শন করি। দুই পক্ষের লোকজনকেই ঝামেলা না করতে নির্দেশ দিই। মুক্তিযোদ্ধা মানিকের দাবির প্রেক্ষিতে ওই জায়গা আবার জরিপ কার্য চালানো হবে।