চাঁদপুর নিউজ রিপোর্ট
সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস এর ড্রাইভার আজম খান স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায়। সমাজের অন্য দশ জনের মতো পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচতে চায়। দীর্ঘ ফেরারী জীবন দূর্বিসহ করে তুলেছে তাকে। আতঙ্ক আর উৎকন্ঠার অবসান হবে কবে এমন প্রশ্নই এখন তাড়া করছে তাকে।
নিজের মুখেই জানালেন আজম খান তাঁর তিন বছরের দীর্ঘ আত্মগোপনের কথা। অসংখ্য বার স্থান বদল করে ফেরারী জীবনে কেমন ছিলেন সে। পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন আজম খান আত্মগোপনের বিপর্যস্ত জীবনের কথা বলতে গিয়ে বার বার চোখের পানি ফেলেন। দীর্ঘ সময়ে নানান জায়গায় নানান পেশায় কাজ করে জীবনাপাত করেন। পেশায় ড্রাইভার হলেও ইট ভাঙ্গা থেকে শুরু করে জেলের নৌকায় মাছ ধরার কাজও করতে হয়েছে তাকে। মাঝে মাঝে স্ত্রী-সন্তানের সাথে দেখা করতেন গোপনে গোপনে। ফেরারী জীবনে বিচিত্র পেশায় অপরিচিত জায়গায় দিন যাপন করতে হয় তাকে। আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা প্রতিনিয়তই তাড়া করতো। বার বার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ব্যাকুলতা ছিলো তাঁর মাঝে। ফেরারী জীবন কষ্টদায়ক হলেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর লড়াইটা নিয়ে সে গর্বিত। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কিংবা প্রশাসনের হস্থক্ষেপ বা অন্য কোন বিষয়ে মুখ খুলেনি আজম খান। এসব প্রশ্ন তিনি বার বার এড়িয়ে যান এ প্রতিনিধির সাথে। তাঁর একটিই আকুতি, আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চাই। দীর্ঘ আত্মগোপনের মাঝে গতকাল ২৫ জুলাই শনিবার নিজ বাড়িতে আজম খানের সাথে কথা হয় এই প্রতিনিধির। বার বার তিনি নিজেকে লুকাতে চেয়েছেন। বলছেন, তাকে দেখলে মানুষের কৌতুহল দৃষ্টির কথা। জনসম্মুখে নানান প্রশ্ন-যোগ জিজ্ঞাসা তাকে নিয়ে।
দীর্ঘ ফেরারী জীবনে কষ্টের মধ্যেও সুখের সন্ধান পেয়েছেন আজম খান। তাঁর ঘর আলোকিত করে দিয়েছে নবজাতক পুত্র সন্তান। আড়াই মাসের এই সন্তানের মুখ দেখার জন্যই ছুঁটে আসা তার।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল গভীর রাতে সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের এপিএস ফারুক বস্তা ভর্তি টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় তার গাড়ির চালক আজম খান পিলখানায় বিজিবির সদর দফতরে ঢুকিয়ে দেন। পরে বিজিবি সদস্যরা গাড়িসহ তাদের আটক করে। এ ঘটনার পর দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় বয়ে যায়। এরপর ১৬ এপ্রিল ‘অর্থ কেলেঙ্কারির’ দায় রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান সুরঞ্জিত। এছাড়া রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা ও কমান্ড্যান্ট এনামুল হককে বরখাস্ত করা হয়।
পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আজম খান চতুর্থ। আলী আজম স্থানীয় নওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে ঢাকায় ট্যাক্সিক্যাব চালাতেন। পরে এপিএস ওমর ফারুকের গাড়ি চালানোর চাকরি নেন।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ৫ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।