মুঠোফোনে প্রবাসী স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে আত্মহত্যা করেছেন দুই সন্তানের জননী শান্তা বেগম (২৮)। গতকাল ৫ জুন মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাঁও ইউনিয়নের আল-বারাকা স্কুলের পাশে সরকার বাড়িতে ইফতারের সময় স্বামীর ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে শান্তা আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বারৈড়গাঁও গ্রামের শাহ আলম ভঁূইয়ার বড় মেয়ে শান্তা আক্তারের ১০/১২ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই উপজেলার খাদেরগাঁও ইউনিয়নের সরকার বাড়ির রমিজ উদ্দিন সরকারের বড় ছেলে প্রবাসী রাজু সরকার হাবিলের সাথে। সংসার জীবনে তাদের রায়না (৯) ও ফারিয়া (৩) নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ঘটনার দিন সকালে শান্তা তার তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া রায়নাকে স্কুলে দিয়ে বাপের বাড়ি যায়। বাপের বাড়ি থেকে আছর নামাজের পর স্বামীর বাড়িতে আসে। পরে সন্ধ্যায় শান্তা তার রুম থেকে দুই মেয়েকে বের করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দেয়।
শান্তার স্বামী প্রবাসী রাজু সরকার হাবিলের ছোট ভাই খোকনের স্ত্রী মিনা জানান, সন্ধ্যায় বাচ্চাদের কান্নার শব্দ পেয়ে ভেবেছিলাম হয়তো ভাবী তার সন্তানদের পড়ালেখায় না বসার কারণে মেরেছেন, প্রায়ই এমন হয়ে থাকে। কিন্তু তারা যখন ঘর থেকে বের হয়ে আমাদের কাছে এসে বলে যে, ‘তার মা তাদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে কী যেন করছে’। এ কথা শুনে আমার দেবর জয়নাল আবেদীন ঘরের জানালা ফাঁক করে দেখতে পায় শান্তা ভাবী গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে রয়েছে।
ওই বাড়ির অনেকে জানান, এ ঘটনার পর মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশকে খবর দেয়া হলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এদিকে শান্তার মৃত্যুর খবর পেয়ে তার বাপের বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে এসে শিশু রায়না ও ফারিয়াকে নিয়ে যায়। শান্তার ছোট ভাই সাকিব বলেন, ঘটনার দিন সকালে আমার বোন বাড়িতে এসেছিল। মায়ের সাথে তার স্বামীর বিষয়ে অনেক কথাই বলে যান। শান্তার চাচা ইসমাইল হোসেন বলেন, যে সময় শান্তা তার মেয়েকে রুম থেকে বের করে দেয় তখন তার শ্বশুর ওই ঘরেই ছিল। জানালা দিয়ে ফাঁসি দেয়ার ঘটনা তারা (শান্তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন) দেখতে পেয়েও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।