রফিকুল ইসলাম বাবু ।
চাঁদপুর কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে মেশিন গত চার বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। যে কারণে রোগি নিয়ে বিপাকে পড়া অভিভাবকদের চরম ভোগান্তি নিত্যনৈমত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাথে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থও হচ্ছেন তারা। শুধু তাই নয়, একই সময় ধরে এ হাসপাতালে বড় ধরণের অস্ত্র পচার বা সিজার করা হয় না। তাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে তথা নাকের ডগায় গড়ে উঠেছে তিনটি প্রাইভেট ক্লিনিক। ক্লিনিক ডায়াগনস্টিকগুলোতে চলছে রমরমা বানিজ্য। কোনো নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে এসব প্যাথলজি ক্লিনিক। এরমধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটকের সামনেই বীরদর্পে ডাক্তার আবদুল হাই ডিজিটাল ডায়গনস্টিক সেন্টার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ঠিক এর পাশাপশি রয়েছে টিটু ল্যাব, মনোয়ারা ডায়াগস্টিক সেন্টার। এছাড়া কচুয়া বাজার ও আশপাশের এলাকায় বিশেষ করে কৈইলাইন, রঘুনাথপুর ও রহিমানগর বাজারে গড়ে উঠেছে প্রায় এক ডজন প্রাইভেট ক্লিনিক। এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অন্যান্য সেবা গ্রহণের সুযোগ থাকলেও বিড়ম্বনা ভাগ্যে জোটেই চিকিৎসা নিতে আসা রোগি ও অভিভাবকদের। কারণ কোনো চিকিৎসকই নির্ধারিত সময়ে অফিস করেন না। এমনটি সপ্তায় দুই একদিন এসেও এক দেড় ঘন্টা হাসপাতালে অবস্থান করে চলে যান অভিযোগ স্থানীয়দের। রোগিরা সারিবদ্ধ ভাবে দুইতিন ঘন্টা অবস্থান করার পর স্বাক্ষাত মিলে চিকিৎসকের। এমনটাই চিত্র প্রতিদিনের দাবি ভূক্তভোগিদের। মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, কোনো চেম্বারেই চিকিৎসক নেই। এমনকি জরুরি বিভাগেও। গণমাধ্যম কর্মী এসেছে শুনে দুপুর ১২টার দিকে দ্রুত ছুটে আসেন কয়েকজন চিকিৎসক। ছুটে আসেন আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ আবদুল মান্নানও। বর্তমানে তিনি প্রাইভেটে রোগি দেখতে গিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত সময় পার করেন। অনেক রোগি অভিযোগ করেছেন প্রায় সব ডাক্তারই অফিস চলাকালীন সময়ে প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে রোগি দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। যদি কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এহসপাতালে পূর্বের তুলনায় চিকিৎসা সেবার মান অনেক খানি উন্নত হয়েছি। পূর্বের সে চিত্র এখন দেখা যাবে না। দালালের উপদ্রুব অনেকাংশে হ্রাস পোয়েছে। যদিও ডুমুরিয়া, কাদলা, শ্রীরামপুর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগি অভিভাবক, আরিফ হোসেন, খোদেজা বেগম, মুকবুল মিয়া জানান, আমরা গরিব মানুষ। কষ্ট হলেও ডাক্তারের অপেক্ষায় থাকি। কারণ বেশি টাকা দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয় না। যদিও যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো তারা প্রাইভেটেই দেখায়। তারা সিরিয়ালে এসে দাঁড়ায় না। কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার আবদুস সালাম হাওলাদার এ সেবাতেই এলাকার মানুষ অনেক খুশি বলে তিনি মুঠোফোনে মত ব্যক্ত করেন। তিনি আরো যোগ করেন, হাসপাতালের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। বিশেষ করে ১০জন কনসালটেন্ট এর মধ্যে কর্মরত আছেন ৫জন। মেডিক্যাল অফিসার ১৭জনের মধ্যে কর্মরত আছেন ১১জন। বাকী পদগুলোতে চিকিৎসক নে। যদিও ১১টি শুন্যপদ দিয়েই প্রায় সঠিক ভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়ার চেষ্টা চলছে।পূর্বের তুলনায় এ হাসপাতালে সেবার মান অনেকাংশে বেড়েছে বলে দাবি করেন তিনি।