হাজীগঞ্জ পতিনিধি
স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলো গৃহবধূ রেখা বেগম। তবে মৃত্যু থেকে বেঁচে যাওয়া রেখা এখন হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। গত ক’দিন ধরে রেখা হাসপাতালে চিকিৎসারত থাকলেও পাষণ্ড স্বামী সেলিম মিয়া একবারের জন্যও তাকে দেখতে আসেনি। বর্তমানে রেখা তার মা ও ভাইদের তত্ত্বাবধানে খেয়ে না খেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার রেখার স্বামীর বাড়ি হাজীগঞ্জ উপজেলার হাটিলা ইউনিয়নের বেলঘর এলাকার কুমার বাড়িতে।
গতকাল মঙ্গলবার হাসপাতালে গেলে আহত রেখা চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, ৬টি সন্তানের ঘরে স্বামী ঠিকমতো না চলার কারণে অভাব সবসময় লেগে থাকে। ঘটনার দিন সকালে ঘরে খাওয়ার মতো কিছুই ছিলো না। আর বাচ্চারা বার বার খাবারের জন্য আমার কাছে এসে কান্নাকাটি করছে। আমি ক্ষোভে দুঃখে ছোট বাচ্চাটিকে মারি। এতে বাচ্চার বাবা আমাকে সকালে প্রচণ্ড মারধর করে। একই কারণে ঐ দিন পর পর আরো ২বার আমাকে মারধর করে। এতে মনের কষ্টে আমি ঘরে থাকা কীটনাশক খেয়ে ফেলি।
রেখার মা মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আফিয়া খাতুন জানান, আমাদের বাড়ি গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রামে। সেলিমের কাছে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে কোনোদিনও মেয়ে কিংবা আমার ঘরের কেউ শান্তি পায়নি। মেয়ের ঘরে ৬টি নাতি/নাতনি। বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী সংসার বিমুখ। নাতি-নাতনিদের খাওয়া-দাওয়া, হাট- বাজারের দিকে কখনো সে খেয়াল রাখেনি। তারপরও আমি আমার সাধ্য মতো সবসময় মেয়ের সুখের কথা ভেবে টাকা, চালসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে আসছি। এরপরও জামাইর মন ভরেনি। গত ক’দিনে সে একবারের জন্য হলেও হাসপাতালে মেয়েকে দেখতে আসেনি।
রেখার ভাই আঃ বারেক বলেন, আমার বোনটি কোনোদিন সুখের মুখ দেখেনি। বোনের সুখের কথা ভেবে বোন জামাই যখন যা চাইতো তখন তাই দিতাম। তারপরও বোনের উপর এতো অত্যাচার।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক জানান, রেখা এখন আশঙ্কামুক্ত। তবে সে মারাত্মক দুর্বল, ভালো ভালো খাবার খেলে সুস্থ হয়ে উঠবে।